Skip to main content

শেষের কবিতা - রবীন্দ্রণাথ ঠাকুর । Shesher Kobita by Rabindranath Tagore

 বইখানা পড়া শেষ করতেই দু:খ অনুভব করতে লাগলাম৷ রবীন্দ্রনাথ চেয়েছেনই দু:খ দিতে, তাইতো সাজিয়েছেন এমন গল্প যা ছুঁয়ে যাবে পাঠকের হৃদয়৷

গল্পটা প্রেমের৷ জীবনে কোনো মেয়ের প্রেমে না পড়া অমিতও একসময় প্রেমে পড়ে যায় লাবণ্যের৷ কারোই বিশ্বাস হয় না অমিতের মতো একটা ছেলে আবার প্রেমেও পড়তে পারে৷
অমিত অতিরিক্ত কথা বলে৷ নিজেকে যুক্তি তর্কে জেতাবার চেষ্টা করে। সফলও হয়৷ অনেকেই অমিতের অমন রঙঢঙের কথাবার্তায় গলে যায়৷ অমিত লাবণ্যকে পেতে কথার আসর বসায়৷ তাতে কাজ হয় অবশ্য৷
ওদিকে লাবণ্য আবেগের পাশাপাশি রেখেছে বিবেককেও৷ রবী ঠাকুর তার মাঝে নারীর প্রতিনিধিত্ব করা গুণাবলি ফুটিয়ে তুলেছেন৷ শত প্রেমের মাঝেও নারীরা ভবিষ্যত নিয়ে ভাবে, বাস্তবতা চিন্তা করে।
অমিত লাবণ্যের প্রেম যখন তুঙ্গে তখনই লাবণ্যের কাছে একটা চিঠি আসে। এরপরই উল্টেপাল্টে যায় সব। ভাবনায় যা থাকে, গল্পে তার ছাপ নেই৷ এরপর বলে কয়ে গল্পের ইতি ঘটে৷ কিন্তু কি ছিলো সেই চিঠিতে? কে পাঠালো সে চিঠি?
রবী ঠাকুর প্রেম নিয়েই লিখেছেন বইটি। প্রতিটি কথার সাথে সাথে উদাহরণ জুড়ে দেয়া। শিখিয়েছেন কবিতার নানান দিক৷ শিখিয়েছেন যুক্তি৷ সেইসাথে নিজেই করেছেন নিজের কবিতার সমালোচনা। যাকে আমরা আজকাল বলি আয়রনি।
গল্পজুড়ে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন সবচেয়ে দায়িত্বজ্ঞানহীন পুরুষও একসময় প্রেমে পড়ে। দায়িত্ব নিতে চায়। আবার ফুটিয়ে তুলেছেন প্রথম প্রেমের বুনে রাখা বীজ, নতুন প্রেমে বিঘ্ন ঘটায়। নারীর সিদ্ধান্তহীনতার কথাও বেশ অবলীলায় বলে গিয়েছেন এখানে৷
এই আরকি। প্রোডাকশন নিয়ে কথা বলার ইচ্ছে নেই আর। শুধু বলি বইটা প্রিমিয়াম পাবলিকেশনের।

Comments

Popular posts from this blog

নাজিম উদ দৌলার প্রহেলিকা । Prohelika by Nazim ud doula

  লেখক নাজিম উদ দৌলার সাথে জার্নি শুরু করেছি তার লিখিত "প্রহেলিকা" উপন্যাসিকাটির মাধ্যমে৷ পড়া শেষ৷ একটি থ্রিলার মৌলিক উপন্যাসিকা৷ শহরে বাচ্চাদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে। প্রত্যেকের মাথা ইট অথবা পাথর দিয়ে থেতলে দেয়া৷ অবাক করার বিষয় প্রতিটা লাশের পাশেই পাওয়া যাচ্ছে খুনির ব্যবহৃত জিনিসপত্র৷ খুনি কী তবে এতই বোকা? নাকি এর পেছনে আছে অন্য কোনো ঘটনা? থ্রিলার গল্পের মাঝেও লেখক প্রেমের ঘটনা কানেক্ট করেছেন৷ চরিত্রগুলোকে করেছেন সাবলীল। এছাড়া মূল আসামীর আসামী হয়ে ওঠার গল্পও তুলে ধরেছেন লজিকালি। বাঙালি গোয়েন্দা যেভাবে কথা বলে, ঠিক সেভাবেই কথা বলিয়েছেন তিনি। ফ্ল্যাশব্যাকের সাথে গল্পের কানেকশন ভালোই। তবে একটা বিষয় একটু অবাস্তব লেগেছিলো। কাহিনীর টুইস্টগুলো ভালো৷ মজাদার। সাসপেন্সওয়ালা টুইস্ট না হলেও, টুইস্টগুলো মজাদার৷ একেক চরিত্র, একেক বিশেষত্ব, একেক কাহিনী। পুরোটাকে একটা ডটে এনে মিশিয়েছেন নাজিম উদ দৌলা। আর সে ডটটি হলো "ভালোবাসা।" মূল আসামীকে ধরার অনেক আগেই বুঝে যাওয়া যায় আসামীকে। কয়েক লাইনের কথোপকথনে একটু ভালোমতো খেয়াল করলেই বোঝা যায়৷ এছাড়া সেখানে খুনীর একটা দূর্বলতার কথা অনেক বলে দেয়া...

পুফি । হুমায়ূন আহমেদ

বইটা কেনার আগে নাম তেমন শুনিনি। সত্য বলতে খুঁজিও-নি। হুমায়ূন আহমেদের কিছু যেমন আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তেমনি কিছু বই আবার আন্ডাররেটেড৷ অবশ্য হুমায়ূন আহমেদ যতগুলো বই লিখেছেন সবগুলো পড়ে মতামত জানানো হয়তো সকলের জন্য সম্ভব না৷ তাই কিছু বই থেকে যায় আড়ালে। "পুফি" বইটি ঠিক তেমন একটি বই। প্রচ্ছদ আর নাম দেখে ভেবেছিলাম শিশুতোষ কোনো উপন্যাস৷ বইয়ের ভেতরে নিজের নাম লিখে রেখেছে মুনতাকা। বাচ্চাসুলভ হাতের লেখা। তাই আমি শতভাগ নিশ্চিত হয়ে গেলাম বইটা শিশুতোষই। এরপর বই পড়া শুরু। শুরুতেই হুমায়ূন আহমেদের সতর্ক বার্তায় চোখ গেলো। সেখানে যা লেখা তার সারাংশ হলো, "বইটি বাচ্চাদের থেকে একশ' হাত দূরে রাখুন। এটা বাচ্চাদের বই না৷ বইয়ের কভার দেখেই বাচ্চাদের বই ভেবেছেন৷ আপনি আসলে মগা৷ কারন আপনি হুমায়ূনের দেয়া নামকে আক্ষরিক অর্থেই বিশ্বাস করেন।" গল্পটা একটা বিড়ালকে নিয়ে। তার নাম "পুফি"৷ এই পুফিকে উপহার হিসেবে পায় অনিকা৷ তার খুব পছন্দ এই বিড়াল। বিড়ালটাও বেশ সভ্য। অনিকার বাবার নাম জোয়ার্দার। জোয়ার্দারের বিড়াল অপছন্দ৷ শুধু বিড়াল না, যেকোনো পশু-পাখি তার অপছন্দ৷ কারন তিনি যখন ছোট তখন এক...

কবি ও বাস্তবতা

 মানুষ ব্লগে কী লেখে আমি তা জানিনা । জানার কথাও না । ব্লগ খোলার কারন একটা সিভিতে ওয়েবসাইটের লিংক দিতে হবে এজন্য ।  ব্লগকে অনেকটা ডায়েরির মতো লাগে । ওপেন ডায়েরি । যে ডায়েরি বাইরে পরে থাকলেও কেউ খুলে দেখে না । অথচ হুট করে এক কৌতুহলী কেউ ডায়েরিটা হাতে নেয় । নিয়ে পড়ে । কী কী লেখা তা দেখে বোঝার চেষ্টা করে । কখনো দুঃখে ডুবে যায় , আবার কখনো অট্টহাসিতে মেতে ওঠে । এরপর লেখকের সম্পর্কে একটা ধারণা জন্ম নেয় তার মাঝে । কিছুসময় পাঠক রচয়িতাকে ভাবতে থাকে । এরপর ধীরে ধীরে ভুলে যেতে থাকে । একসময় তিনি ভুলে যান ডায়েরির কথা । ডায়েরিটা আবারও পূর্বের মতো পড়ে থাকে । তাকে কেউ আর খুলে না । ধুলোবালি জমে। প্রতিটা মানুষের জীবনে নানা রকম গল্প থাকে । আমারও আছে । সে গল্প আমি চাইলে লিখে রাখতে পারি এখানে । অথবা কিছু দুঃখের কথা লিখতে পারি । লিখতে পারি কতটুকু স্মৃতির বোঝা নিয়ে এখনো জীবিত আমি । কষ্টের কথাগুলোকে লিখে রাখতে পারি এখানে । কিন্তু তাতে লাভ কী? একজন মানুষ আমার দুঃখের কথাগুলো পড়বে এটা কেমন না? দুঃখের কথা শোনার অধিকার শুধুমাত্র প্রিয়তমার । এ বাদে আর কেউ এই কথা পড়ার মানে নিজের কোনো মূল্য না রাখা । আমার কবি...