Skip to main content

হত্যাকারী কে? পাচকড়ি দে । Who is the murderer? by Pachkori dey

 কে বলেছে আগের গোয়েন্দা উপন্যাস গুলোতে থ্রিল থাকে না? পাঠককে মাতিয়ে রাখতে পারে না?

বাংলা ভাষায় গোয়েন্দা উপন্যাস জনরার শুরুর আমলে যারা লিখতেন তাদের মধ্যে "পাঁচকড়ি দে" অন্যতম। তারই এক অসাধারণ সৃষ্টি "হত্যাকারী কে?" উপন্যাসিকাটি৷ এটাকে উপন্যাস বলবো নাকি উপন্যাসিকা বলবো? হবে কিছু একটা৷ সে আলাপে যাবো না।


গল্পটা যোগেশের। সে ভালোবাসতো লীলাকে। অথচ লীলার বিয়ে হলো অন্য ছেলের সাথে। তার নাম শশিভূষণ। সে মদ খেয়ে মাতাল হয়ে লীলাকে ভয়াবহ অত্যাচার করে। যোগেশের সহ্য হয় না৷ খারাপ লাগে৷ যোগেশ শশিকে বোঝায় বউকে মারতে নেই। শশি বোঝে৷ কিন্তু মাতাল হয়ে আবার মারে৷ একসকালে লীলার ভাই খবর পাঠায় লীলাকে খুন করেছে শশি৷ পুলিশ গ্রেফতার করেছে৷ শশি আকুতি করে যোগেশের সাথে দেখা করার জন্য। দেখা হলে কান্নাকাটি করে জানায় সে লীলাকে খুন করেনি। যোগেশেরও কেন যেনো তাই মনে হয়। সে নামকরা ডিটেক্টিভ অক্ষয় বাবুকে ভাড়া করেন। অক্ষয় বাবু চিন্তিত হয়ে ভাবেন - "শশি যদি হত্যা না করে থাকে, তাহলে হত্যাকারী কে?"


মূল টুইস্ট নিয়মিত থ্রিলার পাঠকরা কিছুক্ষেত্রে ধরতে পারলেও বিভ্রান্ত হয়ে যাবেন। শেষদিকে এমনভাবে টুইস্ট দেয়া হয় যা ভাবা হয় না। সবথেকে ইন্টারেস্টিং ব্যাপার হলো গোয়েন্দা উপন্যাস হলেও উপন্যাসে গোয়েন্দার কার্যক্রম শুরুতে বোঝা যায় না৷ কিন্তু টুইস্টের পর যখন অক্ষয়বাবু সব ব্যাখ্যা করেন তখন বোঝা যায় কেন এত চুপচাপ মনে হয়েছে তাকে। আর এখানেই বের হয়ে আসে পাঁচকড়ি দে এর চিন্তার সুনিপুণতা।


হাইলি সাজেস্টেড। ক্লাসিকাল হওয়াতে অনেক শব্দ খুবই কঠিন। তবে গল্প বুঝতে সমস্যা হয় না৷ কিন্তু ব্যাখ্যা জানতে চাইলে অভিধান এর সাহায্য লাগতে পারে৷ নতুন পাঠকদের জন্য সাজেস্টেড না।

সাহিত্যপিডিয়া পাবলিকেশনের এই কাজটা জাস্ট অসাম হইছে৷
.


Comments

Popular posts from this blog

নাজিম উদ দৌলার প্রহেলিকা । Prohelika by Nazim ud doula

  লেখক নাজিম উদ দৌলার সাথে জার্নি শুরু করেছি তার লিখিত "প্রহেলিকা" উপন্যাসিকাটির মাধ্যমে৷ পড়া শেষ৷ একটি থ্রিলার মৌলিক উপন্যাসিকা৷ শহরে বাচ্চাদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে। প্রত্যেকের মাথা ইট অথবা পাথর দিয়ে থেতলে দেয়া৷ অবাক করার বিষয় প্রতিটা লাশের পাশেই পাওয়া যাচ্ছে খুনির ব্যবহৃত জিনিসপত্র৷ খুনি কী তবে এতই বোকা? নাকি এর পেছনে আছে অন্য কোনো ঘটনা? থ্রিলার গল্পের মাঝেও লেখক প্রেমের ঘটনা কানেক্ট করেছেন৷ চরিত্রগুলোকে করেছেন সাবলীল। এছাড়া মূল আসামীর আসামী হয়ে ওঠার গল্পও তুলে ধরেছেন লজিকালি। বাঙালি গোয়েন্দা যেভাবে কথা বলে, ঠিক সেভাবেই কথা বলিয়েছেন তিনি। ফ্ল্যাশব্যাকের সাথে গল্পের কানেকশন ভালোই। তবে একটা বিষয় একটু অবাস্তব লেগেছিলো। কাহিনীর টুইস্টগুলো ভালো৷ মজাদার। সাসপেন্সওয়ালা টুইস্ট না হলেও, টুইস্টগুলো মজাদার৷ একেক চরিত্র, একেক বিশেষত্ব, একেক কাহিনী। পুরোটাকে একটা ডটে এনে মিশিয়েছেন নাজিম উদ দৌলা। আর সে ডটটি হলো "ভালোবাসা।" মূল আসামীকে ধরার অনেক আগেই বুঝে যাওয়া যায় আসামীকে। কয়েক লাইনের কথোপকথনে একটু ভালোমতো খেয়াল করলেই বোঝা যায়৷ এছাড়া সেখানে খুনীর একটা দূর্বলতার কথা অনেক বলে দেয়া...

পুফি । হুমায়ূন আহমেদ

বইটা কেনার আগে নাম তেমন শুনিনি। সত্য বলতে খুঁজিও-নি। হুমায়ূন আহমেদের কিছু যেমন আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তেমনি কিছু বই আবার আন্ডাররেটেড৷ অবশ্য হুমায়ূন আহমেদ যতগুলো বই লিখেছেন সবগুলো পড়ে মতামত জানানো হয়তো সকলের জন্য সম্ভব না৷ তাই কিছু বই থেকে যায় আড়ালে। "পুফি" বইটি ঠিক তেমন একটি বই। প্রচ্ছদ আর নাম দেখে ভেবেছিলাম শিশুতোষ কোনো উপন্যাস৷ বইয়ের ভেতরে নিজের নাম লিখে রেখেছে মুনতাকা। বাচ্চাসুলভ হাতের লেখা। তাই আমি শতভাগ নিশ্চিত হয়ে গেলাম বইটা শিশুতোষই। এরপর বই পড়া শুরু। শুরুতেই হুমায়ূন আহমেদের সতর্ক বার্তায় চোখ গেলো। সেখানে যা লেখা তার সারাংশ হলো, "বইটি বাচ্চাদের থেকে একশ' হাত দূরে রাখুন। এটা বাচ্চাদের বই না৷ বইয়ের কভার দেখেই বাচ্চাদের বই ভেবেছেন৷ আপনি আসলে মগা৷ কারন আপনি হুমায়ূনের দেয়া নামকে আক্ষরিক অর্থেই বিশ্বাস করেন।" গল্পটা একটা বিড়ালকে নিয়ে। তার নাম "পুফি"৷ এই পুফিকে উপহার হিসেবে পায় অনিকা৷ তার খুব পছন্দ এই বিড়াল। বিড়ালটাও বেশ সভ্য। অনিকার বাবার নাম জোয়ার্দার। জোয়ার্দারের বিড়াল অপছন্দ৷ শুধু বিড়াল না, যেকোনো পশু-পাখি তার অপছন্দ৷ কারন তিনি যখন ছোট তখন এক...

কবি ও বাস্তবতা

 মানুষ ব্লগে কী লেখে আমি তা জানিনা । জানার কথাও না । ব্লগ খোলার কারন একটা সিভিতে ওয়েবসাইটের লিংক দিতে হবে এজন্য ।  ব্লগকে অনেকটা ডায়েরির মতো লাগে । ওপেন ডায়েরি । যে ডায়েরি বাইরে পরে থাকলেও কেউ খুলে দেখে না । অথচ হুট করে এক কৌতুহলী কেউ ডায়েরিটা হাতে নেয় । নিয়ে পড়ে । কী কী লেখা তা দেখে বোঝার চেষ্টা করে । কখনো দুঃখে ডুবে যায় , আবার কখনো অট্টহাসিতে মেতে ওঠে । এরপর লেখকের সম্পর্কে একটা ধারণা জন্ম নেয় তার মাঝে । কিছুসময় পাঠক রচয়িতাকে ভাবতে থাকে । এরপর ধীরে ধীরে ভুলে যেতে থাকে । একসময় তিনি ভুলে যান ডায়েরির কথা । ডায়েরিটা আবারও পূর্বের মতো পড়ে থাকে । তাকে কেউ আর খুলে না । ধুলোবালি জমে। প্রতিটা মানুষের জীবনে নানা রকম গল্প থাকে । আমারও আছে । সে গল্প আমি চাইলে লিখে রাখতে পারি এখানে । অথবা কিছু দুঃখের কথা লিখতে পারি । লিখতে পারি কতটুকু স্মৃতির বোঝা নিয়ে এখনো জীবিত আমি । কষ্টের কথাগুলোকে লিখে রাখতে পারি এখানে । কিন্তু তাতে লাভ কী? একজন মানুষ আমার দুঃখের কথাগুলো পড়বে এটা কেমন না? দুঃখের কথা শোনার অধিকার শুধুমাত্র প্রিয়তমার । এ বাদে আর কেউ এই কথা পড়ার মানে নিজের কোনো মূল্য না রাখা । আমার কবি...