Skip to main content

কল্কেকাশি সমগ্র - শিবরাম চক্রবর্তী । Kalkekashi Samagra by Shibram Chakrabarty

গোয়েন্দা হতে হলে গুরুগম্ভীর হতে হবে, বোকামি করা যাবে না, হাসাহাসি করা যাবে না ইত্যাদি কিছু নিয়ম আমরা সেট করে নিয়েছি। সেখানেই ব্যতিক্রমধর্মী এক গোয়েন্দা চরিত্রের সৃষ্টি করেছেন লেখক শিবরাম চক্রবর্তী। যার নাম "কল্কেকাশি।" এই গোয়েন্দা খেতে ভালোবাসে। ভুলভাল যুক্তিতে পটু। করে উদ্ভট কর্মকাণ্ড। কল্কেকাশির এরূপ কর্মকাণ্ড আর শিবরাম সাহেবের রসাত্মক এবং দর্শনমূলক লেখার ফলে কল্কেকাশি স্থান করে নেয় পাঠকদের মনে।
কল্কেকাশি মূলত বাংলা গোয়েন্দা জনরার শুরুর দিকের গোয়েন্দা৷ কল্কেকাশির মোট ৫টি গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে কল্কেকাশি সমগ্র৷ গল্পগুলো হলো - টিকটিকির ল্যাজের দিক, কল্কেকাশির কাণ্ড, ইতর বিশেষ, সূত্র, কল্কেকাশির অবাক কাণ্ড৷

বেনজিন প্রকাশন কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছে বইটি। এবং এটিকে তারা স্থান দিয়েছেন "রহস্য-রোমাঞ্চ" সিরিজে৷ এই সিরিজের সাথে এই বইটি একদমই মানানসই না৷ অবশ্য এ-ব্যাপারে শুরুতেই প্রকাশক মহোদয় বিস্তারিত বলে দিয়েছেন৷ তবে আমার মনে হয়, এই সিরিজে এই বইটি না রাখাই বেটার৷ কেননা এর ফলে বেনজিনের এই সিরিজের প্রতি পাঠকদের বিরূপ ধারণা আসতেই পারে৷
বইটি সেরা কোনো গোয়েন্দার বই না। বরং রম্যের বই যার মাঝের মূল চরিত্র কল্কেকাশি। অবশ্য তিনি কেইস সলভিং করেন তবে লেখক সেদিকে একদমই মনোযোগ দেননি। কিন্তু লেখকের লেখায় আলাদা এক মজা আছে। সেদিক থেকে পাঠক বেশি খুশি না হলেও বিরক্ত হবেন না তা নিশ্চিত৷
বইটি থেকে আমার ভালো লেগেছে "টিকটিকির ল্যাজের দিক"," কল্কেকাশির কাণ্ড" এবং "কল্কেকাশির অবাক কাণ্ড" গল্প তিনটি। বাকিদুটি গল্প দর্শনগত দিক থেকে ঠিকঠাক৷
যারা সিরিয়াস কোনো গোয়েন্দা পড়তে চান না, শুধুমাত্র মজার গোয়েন্দা পড়তে চান অথবা শিশুদের গোয়েন্দা পড়াতে চান তাদের জন্য এই বইটা রেকমেন্ডেড৷ সিরিয়াস গোয়েন্দা পড়ুয়াগণ এই বই পড়ে বিরক্ত হতে পারেন৷ তাদের জন্য এই বইটা সাজেস্টেড না। বইটাকে মন্দ বলা যাবে না, আবার সেরাও বলা যাবে না৷ বলা যায়, "ভালোই তবে.... ।"















Comments

Popular posts from this blog

নাজিম উদ দৌলার প্রহেলিকা । Prohelika by Nazim ud doula

  লেখক নাজিম উদ দৌলার সাথে জার্নি শুরু করেছি তার লিখিত "প্রহেলিকা" উপন্যাসিকাটির মাধ্যমে৷ পড়া শেষ৷ একটি থ্রিলার মৌলিক উপন্যাসিকা৷ শহরে বাচ্চাদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে। প্রত্যেকের মাথা ইট অথবা পাথর দিয়ে থেতলে দেয়া৷ অবাক করার বিষয় প্রতিটা লাশের পাশেই পাওয়া যাচ্ছে খুনির ব্যবহৃত জিনিসপত্র৷ খুনি কী তবে এতই বোকা? নাকি এর পেছনে আছে অন্য কোনো ঘটনা? থ্রিলার গল্পের মাঝেও লেখক প্রেমের ঘটনা কানেক্ট করেছেন৷ চরিত্রগুলোকে করেছেন সাবলীল। এছাড়া মূল আসামীর আসামী হয়ে ওঠার গল্পও তুলে ধরেছেন লজিকালি। বাঙালি গোয়েন্দা যেভাবে কথা বলে, ঠিক সেভাবেই কথা বলিয়েছেন তিনি। ফ্ল্যাশব্যাকের সাথে গল্পের কানেকশন ভালোই। তবে একটা বিষয় একটু অবাস্তব লেগেছিলো। কাহিনীর টুইস্টগুলো ভালো৷ মজাদার। সাসপেন্সওয়ালা টুইস্ট না হলেও, টুইস্টগুলো মজাদার৷ একেক চরিত্র, একেক বিশেষত্ব, একেক কাহিনী। পুরোটাকে একটা ডটে এনে মিশিয়েছেন নাজিম উদ দৌলা। আর সে ডটটি হলো "ভালোবাসা।" মূল আসামীকে ধরার অনেক আগেই বুঝে যাওয়া যায় আসামীকে। কয়েক লাইনের কথোপকথনে একটু ভালোমতো খেয়াল করলেই বোঝা যায়৷ এছাড়া সেখানে খুনীর একটা দূর্বলতার কথা অনেক বলে দেয়া...

পুফি । হুমায়ূন আহমেদ

বইটা কেনার আগে নাম তেমন শুনিনি। সত্য বলতে খুঁজিও-নি। হুমায়ূন আহমেদের কিছু যেমন আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তেমনি কিছু বই আবার আন্ডাররেটেড৷ অবশ্য হুমায়ূন আহমেদ যতগুলো বই লিখেছেন সবগুলো পড়ে মতামত জানানো হয়তো সকলের জন্য সম্ভব না৷ তাই কিছু বই থেকে যায় আড়ালে। "পুফি" বইটি ঠিক তেমন একটি বই। প্রচ্ছদ আর নাম দেখে ভেবেছিলাম শিশুতোষ কোনো উপন্যাস৷ বইয়ের ভেতরে নিজের নাম লিখে রেখেছে মুনতাকা। বাচ্চাসুলভ হাতের লেখা। তাই আমি শতভাগ নিশ্চিত হয়ে গেলাম বইটা শিশুতোষই। এরপর বই পড়া শুরু। শুরুতেই হুমায়ূন আহমেদের সতর্ক বার্তায় চোখ গেলো। সেখানে যা লেখা তার সারাংশ হলো, "বইটি বাচ্চাদের থেকে একশ' হাত দূরে রাখুন। এটা বাচ্চাদের বই না৷ বইয়ের কভার দেখেই বাচ্চাদের বই ভেবেছেন৷ আপনি আসলে মগা৷ কারন আপনি হুমায়ূনের দেয়া নামকে আক্ষরিক অর্থেই বিশ্বাস করেন।" গল্পটা একটা বিড়ালকে নিয়ে। তার নাম "পুফি"৷ এই পুফিকে উপহার হিসেবে পায় অনিকা৷ তার খুব পছন্দ এই বিড়াল। বিড়ালটাও বেশ সভ্য। অনিকার বাবার নাম জোয়ার্দার। জোয়ার্দারের বিড়াল অপছন্দ৷ শুধু বিড়াল না, যেকোনো পশু-পাখি তার অপছন্দ৷ কারন তিনি যখন ছোট তখন এক...

কবি ও বাস্তবতা

 মানুষ ব্লগে কী লেখে আমি তা জানিনা । জানার কথাও না । ব্লগ খোলার কারন একটা সিভিতে ওয়েবসাইটের লিংক দিতে হবে এজন্য ।  ব্লগকে অনেকটা ডায়েরির মতো লাগে । ওপেন ডায়েরি । যে ডায়েরি বাইরে পরে থাকলেও কেউ খুলে দেখে না । অথচ হুট করে এক কৌতুহলী কেউ ডায়েরিটা হাতে নেয় । নিয়ে পড়ে । কী কী লেখা তা দেখে বোঝার চেষ্টা করে । কখনো দুঃখে ডুবে যায় , আবার কখনো অট্টহাসিতে মেতে ওঠে । এরপর লেখকের সম্পর্কে একটা ধারণা জন্ম নেয় তার মাঝে । কিছুসময় পাঠক রচয়িতাকে ভাবতে থাকে । এরপর ধীরে ধীরে ভুলে যেতে থাকে । একসময় তিনি ভুলে যান ডায়েরির কথা । ডায়েরিটা আবারও পূর্বের মতো পড়ে থাকে । তাকে কেউ আর খুলে না । ধুলোবালি জমে। প্রতিটা মানুষের জীবনে নানা রকম গল্প থাকে । আমারও আছে । সে গল্প আমি চাইলে লিখে রাখতে পারি এখানে । অথবা কিছু দুঃখের কথা লিখতে পারি । লিখতে পারি কতটুকু স্মৃতির বোঝা নিয়ে এখনো জীবিত আমি । কষ্টের কথাগুলোকে লিখে রাখতে পারি এখানে । কিন্তু তাতে লাভ কী? একজন মানুষ আমার দুঃখের কথাগুলো পড়বে এটা কেমন না? দুঃখের কথা শোনার অধিকার শুধুমাত্র প্রিয়তমার । এ বাদে আর কেউ এই কথা পড়ার মানে নিজের কোনো মূল্য না রাখা । আমার কবি...