শরৎচন্দ্রের লেখার মাঝে অনেক শিক্ষা থাকে৷ তবে ঐ শিক্ষা দেয়ার ধরন এত মজাদার, স্বাদযুক্ত যে পাঠক নিজের অজান্তেই পুরোটা গিলে ফেলে৷ এই ধরুন স্বামী বইটির কথা৷ সৌদামিনী চরিত্রটাকে এমনভাবে তৈরি করেছেন যেনো মনে হয় আমিই সৌদামিনী৷ সৌদামিনীই এই গল্পের গল্প কথক৷
শরৎচন্দ্র জাদুমাখা লেখার মাধ্যমে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন বাবা মায়ের পর একজন নারীর আপন হলো তার স্বামী৷ অন্য কেউ না৷ এই একটা বিষয় বোঝানোর জন্য কতরকম উদাহরণ যে ভদ্রলোক টেনেছেন তা বলার বাইরে৷
সৌদামিনীর প্রেম ছিলো, তারপর বিয়ে হলো অন্য কারো সাথে, আগে যেহেতু প্রেম ছিলো তাই স্বামীর প্রতি বিতৃষ্ণা আসে৷ এরপর ধীরে ধীরে যখন স্বামীর প্রতি ভালোবাসা জন্মায় তখন আমার প্রেমিক এসে কাঁদে৷ এরপর সৌদামিনীর কী ঘটে তা জানতে হলে বইটা পড়তে হবে৷ অবশ্য বইয়ে লেখার স্বাদ এতই ভালো যে, পুরো স্পয়লার দিয়ে দিলেও আপনার পড়তে মন চাইবেই।
এই গল্পের আড়ালে শরৎ সাহেব নাস্তিকদের নাস্তানাবুদ করেছেন৷ না, কোনো জবাব তিনি দেননি। তবে ট্রল করেছেন মন মতো৷ একজন গ্রাম্য মানুষের চরিত্রে কী যৌক্তিক আলোচনা খাটে? খাটে না বিধায়ই গ্রাম্য ব্যক্তির মতোই নাস্তিককে নিয়ে কটাক্ষ করেছেন শরৎ সাহেব।
মূলত সৌদামিনীর প্রেম, বিরহ, অভিমান, ব্যাথা, সংসার, স্বামী ইত্যাদির এক দূর্দান্ত কম্বিনেশনে তৈরি শরৎচন্দ্রের "স্বামী।" বইটি নিয়েছিলাম বেনজিন প্রকাশনীর অফার থেকে৷ প্রোডাকশন পছন্দ হয়েছে। আর দূর্দান্ত প্রচ্ছদ করেছেন লর্ড জুলিয়ান।
এক কথায় বলতে গেলে, "ভাই বিশ্বাস করেন, জোস বই। পইড়া ফেলেন। "
Comments
Post a Comment