Skip to main content

Posts

কবি ও বাস্তবতা

 মানুষ ব্লগে কী লেখে আমি তা জানিনা । জানার কথাও না । ব্লগ খোলার কারন একটা সিভিতে ওয়েবসাইটের লিংক দিতে হবে এজন্য ।  ব্লগকে অনেকটা ডায়েরির মতো লাগে । ওপেন ডায়েরি । যে ডায়েরি বাইরে পরে থাকলেও কেউ খুলে দেখে না । অথচ হুট করে এক কৌতুহলী কেউ ডায়েরিটা হাতে নেয় । নিয়ে পড়ে । কী কী লেখা তা দেখে বোঝার চেষ্টা করে । কখনো দুঃখে ডুবে যায় , আবার কখনো অট্টহাসিতে মেতে ওঠে । এরপর লেখকের সম্পর্কে একটা ধারণা জন্ম নেয় তার মাঝে । কিছুসময় পাঠক রচয়িতাকে ভাবতে থাকে । এরপর ধীরে ধীরে ভুলে যেতে থাকে । একসময় তিনি ভুলে যান ডায়েরির কথা । ডায়েরিটা আবারও পূর্বের মতো পড়ে থাকে । তাকে কেউ আর খুলে না । ধুলোবালি জমে। প্রতিটা মানুষের জীবনে নানা রকম গল্প থাকে । আমারও আছে । সে গল্প আমি চাইলে লিখে রাখতে পারি এখানে । অথবা কিছু দুঃখের কথা লিখতে পারি । লিখতে পারি কতটুকু স্মৃতির বোঝা নিয়ে এখনো জীবিত আমি । কষ্টের কথাগুলোকে লিখে রাখতে পারি এখানে । কিন্তু তাতে লাভ কী? একজন মানুষ আমার দুঃখের কথাগুলো পড়বে এটা কেমন না? দুঃখের কথা শোনার অধিকার শুধুমাত্র প্রিয়তমার । এ বাদে আর কেউ এই কথা পড়ার মানে নিজের কোনো মূল্য না রাখা । আমার কবি...
Recent posts

সূর্যের দিনে হুমায়ূন আহমেদের বড়ো ভুল!

  সূর্যের দিন উপন্যাসটিতে হুমায়ূন আহমেদ একখানা বড়ো ভুল করেছেন৷ঐতিহাসিক এক বক্তব্যকে বিকৃত করে ফেলেছেন৷ সম্ভবত ব্যাপারটাকে তেমন গুরুত্ব দেননি৷ অথবা খেয়াল করেননি৷ এই ভুল আহামরি ভুল হতো না, যদি উপন্যাসটি কিশোর উপন্যাস না-হতো৷ মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে লেখা এই উপন্যাসটি সেরা একটা উপন্যাস হয়তো৷ আর ঠিক এ-কারণেই এই ভুলটিকে সিরিয়াসলি নিতে হচ্ছে৷ বিশেষ করে ন্যারেটিভের তাগিদে৷ কেননা এর সাথে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার একটা সূক্ষ্ম প্যাঁচ আছে৷ ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের রেসকোর্স ময়দানে ভাষণ দিয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান। ঐ ভাষণের এক অংশ তুলে ধরতে গিয়ে হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন - " আমি যদি তোমাদের মাঝে........... বাংলাকে মুক্ত করে ছাড়ব ইংশাআল্লাহ।" (পৃষ্ঠার ছবি পোস্টে সংযুক্ত) উল্লেখ্য তিনি এখানে যে "বাংলা" মুক্ত করার কথা তুলেছেন, আমার জানামতে ঐ ভাষণে এমন কথা ছিলো না৷ বরং ছিলো "....এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইংশাআল্লাহ৷" দুইটা কথার মাঝে তফাৎ বৃহৎ। কেননা প্রথম বয়ান দ্বারা সরাসরি যুদ্ধের প্রস্তুতির কথা ফুটে উঠে৷ নতুন দেশ তৈরির কথা ফুটে উঠে৷ অথচ আমার জানামতে তখনও নেগোসিয়েশন চলছ...

বোতল ভূত - হুমায়ূন আহমেদ । কিশোর উপন্যাস । Botol Bhut by Humayun Ahmed . Novel

  হুমায়ূন আহমেদ লিখিত কিশোর উপন্যাস "বোতল ভূত।" কাকলী প্রকাশন কর্তৃক প্রকাশিত কিশোর সমগ্রের প্রথম উপন্যাস এই বোতল ভূত। ( সপ্তম মুদ্রণ, জানুয়ারি ২০০৬) আমার মাথায়ও একটি ভূত চাপলো। ভয়ানক ভূত। ভূতের ইচ্ছা এই বয়সে এসে কিশোর পড়তে হবে৷ বেশ দ্বিধাতেই ছিলাম যে, এখন কিশোর উপন্যাস পড়ে পরিপূর্ণ মজা পাওয়া যাবে কিনা৷ লেখক হুমায়ূন আহমেদ বলেই সাহস করলাম৷ ভদ্রলোকের লেখা সহজ সাবলীল হওয়ায় যেকোনো ধাঁচের লেখাই পড়ে তৃপ্ত হওয়া যায়। বোতল ভূত সেরা একটি কিশোর উপন্যাস৷ বোতলের মাঝে ভূত থাকে। বাচ্চা ভূত৷ বড়োরা কেউ বিশ্বাস করলেন না এর মাঝে ভূত আছে৷ কিন্তু বাচ্চা ভূত এমন সব কাণ্ড ঘটালো যাতে বিজ্ঞানের ছাত্রী অরু আপারও মাথা খারাপ হয়ে গেলো৷ তবুও তিনি মানলেন না বোতলে ভূত আছে৷ কারণ সায়েন্সে পড়লে সব অবিশ্বাস করতে হয়৷ মুনির, হুমায়ূন, বড় চাচা, নকল রবিঠাকুর, অঙ্ক স্যার, বগা ভাই এরাই মূলত মূল চরিত্র৷ আরেকটা শয়তান ছেলে আছে৷ শিক্ষক কাউকে মারলে সে খুব খুশি হয়৷ তার নাম ভুলে গেছি। একটা পার্ফেক্ট কিশোর উপন্যাসে যেসব উপকরণ থাকা জরুরি তার সবই এখানে আছে৷ বাচ্চাদের বক্তব্যগুলো খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন গল্পকথক। যেমন - দুন...

শেষের কবিতা - রবীন্দ্রণাথ ঠাকুর । Shesher Kobita by Rabindranath Tagore

  বইখানা পড়া শেষ করতেই দু:খ অনুভব করতে লাগলাম৷ রবীন্দ্রনাথ চেয়েছেনই দু:খ দিতে, তাইতো সাজিয়েছেন এমন গল্প যা ছুঁয়ে যাবে পাঠকের হৃদয়৷ গল্পটা প্রেমের৷ জীবনে কোনো মেয়ের প্রেমে না পড়া অমিতও একসময় প্রেমে পড়ে যায় লাবণ্যের৷ কারোই বিশ্বাস হয় না অমিতের মতো একটা ছেলে আবার প্রেমেও পড়তে পারে৷ অমিত অতিরিক্ত কথা বলে৷ নিজেকে যুক্তি তর্কে জেতাবার চেষ্টা করে। সফলও হয়৷ অনেকেই অমিতের অমন রঙঢঙের কথাবার্তায় গলে যায়৷ অমিত লাবণ্যকে পেতে কথার আসর বসায়৷ তাতে কাজ হয় অবশ্য৷ ওদিকে লাবণ্য আবেগের পাশাপাশি রেখেছে বিবেককেও৷ রবী ঠাকুর তার মাঝে নারীর প্রতিনিধিত্ব করা গুণাবলি ফুটিয়ে তুলেছেন৷ শত প্রেমের মাঝেও নারীরা ভবিষ্যত নিয়ে ভাবে, বাস্তবতা চিন্তা করে। অমিত লাবণ্যের প্রেম যখন তুঙ্গে তখনই লাবণ্যের কাছে একটা চিঠি আসে। এরপরই উল্টেপাল্টে যায় সব। ভাবনায় যা থাকে, গল্পে তার ছাপ নেই৷ এরপর বলে কয়ে গল্পের ইতি ঘটে৷ কিন্তু কি ছিলো সেই চিঠিতে? কে পাঠালো সে চিঠি? রবী ঠাকুর প্রেম নিয়েই লিখেছেন বইটি। প্রতিটি কথার সাথে সাথে উদাহরণ জুড়ে দেয়া। শিখিয়েছেন কবিতার নানান দিক৷ শিখিয়েছেন যুক্তি৷ সেইসাথে নিজেই করেছেন নিজের কবিতার সমালোচনা। যা...

কারমিল্লা - জোসেফ শেরিড্যান লে ফানু । বাংলা অনুবাদ লুৎফুল কায়সার। Carmilla by J. Sheridan Le Fanu

কারমিল্লা হলো একটি স্লো বার্ন হরর উপন্যাসিকা। লিখেছেন জোসেফ শেরিড্যান লে ফানু৷ ভ্যাম্পায়ার হররে জনপ্রিয় উপন্যাস "ড্রাকুলা" বইটির অনুপ্রেরণা হিসেবে ছিলো এই "কারমিল্লা।" এই উপন্যাসটিকে নারী ভ্যাম্পায়ারের পথিকৃৎ-ও বলে থাকেন অনেকে৷ বইটির বাংলা অনুবাদ প্রকাশ করেছে বেনজিন প্রকাশন। অনুবাদ করেছেন লুৎফুল কায়সার৷ লুৎফুল কায়সারের নাম-ডাক শুনলেও তার অনুবাদের সাথে আমার পরিচয় ছিলো না। এই অনুবাদটির মাধ্যমে লুৎফুল কায়সারের অনুবাদের সাথেও পরিচয় হয়। এক কথায় অসাধারণ অনুবাদ৷ যেখানে বর্তমানের কিছু অনুবাদ পড়ে খালি-খালি মনে হচ্ছিলো, বিরক্ত হচ্ছিলাম সেখানে এই ভদ্রলোকের অনুবাদ একেবারে সাবলীল। অনুবাদ তো সেরা-ই সেইসাথে পাঠককে আটকে রাখার জন্য যত উপকরণ দরকার তার সবটুকুই ঢেলেছেন লুৎফুল কায়সার৷ একটু সময়ের জন্যও বিরক্ত হইনি। লরা নামের একটা মেয়ের গল্প। তার কোনোকিছুর কমতি না থাকলেও একটি দু:খ তার মাঝে ছিলো। তার সমবয়সী কোনো বন্ধু নেই। তার উপর বলতে গেলে এক জনমানবহীন এলাকায় তার বসবাস। কিন্তু এই দু:খ বেশিদিন রইলো না। এক পূর্ণিমার রাতে তার প্রাসাদে আসে একটি মেয়ে। মেয়েটি অসুস্থ থাকায় তাদের বাড়িতে আশ্রয় দেয়...

দ্য গার্ল হু লেপ্ট থ্রু টাইম - ইয়াশুতাকা শুতশুই । The Girl Who Leapt Through Time by Yasutaka Tsutsui [ Toki Wo Kakeru Shoujo ]

ইয়াশুতাকা শুতশুই এর জনপ্রিয় একটি উপন্যাস "The Girl Who Leapt Through Time". এই নামে একটি Anime-ও আছে৷ এই বইটির বাংলা অনুবাদ বের করেছে প্রিমিয়াম পাবলিকেশন৷ অনুবাদক এ.এস.এম রাহাত। অনুবাদক শুরুতেই একটা বড়ো ভুল করে ফেলেছেন। আগে সেটুকু আলাপ করি, এরপর বইয়ের আলাপে ফিরছি। পৃষ্ঠা নং ০৫, অনুবাদকের কথায় অনুবাদ বলেছেন বইটির ক্যাটাগরি থ্রিলার৷ থ্রিলার তার পছন্দের জনরা৷ তবে মজার ব্যাপার হলো বইটার জনরা থ্রিলার না৷ বরং সাইফাই৷ সাইফাই থ্রিলার বললেও কিছুটা মানা যেতো৷ শুধু থ্রিলার দ্বারা যা বোঝায়, আদতে এই বই তেমন নয়৷ এই বইকে রোম্যান্টিক বললেও মানা যায়৷ তবে থ্রিলার কোনো ক্রমেই মানা যায় না৷ গল্পটা কাজুকোর৷ একটা মেয়ে৷ একদিন স্কুলের লাইব্রেরিতে একটা ছায়া দেখতে পায়৷ কালো ছায়াটির পিছু নিয়ে সামনে এগোয়। হঠাৎ ল্যাভেন্ডারের ঘ্রাণ পায়। এরপর থেকেই অদ্ভুত সব কাণ্ড ঘটে। আচমকা অনুধাবন করতে পারে সে একদিন পেছনে ফিরে গিয়েছে। যা কিছু ঘটবে তা সে আগে থেকেই জানে৷ অর্থাৎ সে বর্তমান থেকে একদিন পেছনে টাইম ট্রাভেলের মতো করেছে৷ সে ভাবলো এটা মনে হয় তার মাঝে থাকা কোনো বিশেষ শক্তি। তবে আদতে কি তাই? উহু! তাহলে? কালো ছায়াটি...

মমতাদি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় । Momotadi by Manik Bandopadhyay

  "কেউ যা দেয় না, তুমি তা দেবে কেন?" বাক্যটির কথা সকলেরই মনে থাকার কথা৷ লাইনটুকু পড়েই খিলখিল করে হেসে উঠতো সবাই। সে হাসি দুষ্টু হাসি। ক্লাসের অন্য কোনো স্মৃতি কারও মনে না থাকলেও মমতাদিকে মনে হয়না কেউ ভুলেছে৷ মমতাদিকে ঘিরেইতো ছিলো বাংলা ক্লাসে হাসাহাসির আয়োজন। অন্তত সেই বাঙলা ক্লাসের স্মৃতিকে আগলে রাখায় মমতাদির একটি ধন্যবাদ প্রাপ্য। এখানে শিক্ষার্থীদের দোষ দিয়েও লাভ নেই। গল্পটার আংশিক ছিলো সে বইয়ে৷ মূলটুকুই দেয়া হয়েছিলো বাদ৷ ফলে মমতাদি ঠিক কেমন তা বুঝে ওঠা হয়নি কারোরই৷ তবে ক্লাসে জানা হয়নি বলে আর জানা হবে না, তা কিন্তু নয়। বেনজিন প্রকাশন কর্তৃক প্রকাশিত "মমতাদি" বইটি পড়লেই জানা যায় কে এই মমতাদি৷ বইটিতে স্থান পেয়েছে দুইটি গল্প৷ একটি "মমতাদি" এবং অপরটি "বৃহত্তর মহত্তর।" মমতাদির দু:খের জীবন যাপনের বিষয়টি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্রথম গল্পে৷ যেনো গ্রাম বাংলার সংসারের নিত্যদিনের রূপ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় চিত্রায়িত করেছেন রঙ-তুলিতে। এত দূর্দশা অত্যাচারের পরেও স্বামীর প্রতি ভালোবাসার কথা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই গল্পে৷ "বৃহত্তর মহত্তর" গল্পে আবার একই মমতা...

কল্কেকাশি সমগ্র - শিবরাম চক্রবর্তী । Kalkekashi Samagra by Shibram Chakrabarty

গোয়েন্দা হতে হলে গুরুগম্ভীর হতে হবে, বোকামি করা যাবে না, হাসাহাসি করা যাবে না ইত্যাদি কিছু নিয়ম আমরা সেট করে নিয়েছি। সেখানেই ব্যতিক্রমধর্মী এক গোয়েন্দা চরিত্রের সৃষ্টি করেছেন লেখক শিবরাম চক্রবর্তী। যার নাম "কল্কেকাশি।" এই গোয়েন্দা খেতে ভালোবাসে। ভুলভাল যুক্তিতে পটু। করে উদ্ভট কর্মকাণ্ড। কল্কেকাশির এরূপ কর্মকাণ্ড আর শিবরাম সাহেবের রসাত্মক এবং দর্শনমূলক লেখার ফলে কল্কেকাশি স্থান করে নেয় পাঠকদের মনে। কল্কেকাশি মূলত বাংলা গোয়েন্দা জনরার শুরুর দিকের গোয়েন্দা৷ কল্কেকাশির মোট ৫টি গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছে কল্কেকাশি সমগ্র৷ গল্পগুলো হলো - টিকটিকির ল্যাজের দিক, কল্কেকাশির কাণ্ড, ইতর বিশেষ, সূত্র, কল্কেকাশির অবাক কাণ্ড৷ বেনজিন প্রকাশন কর্তৃক প্রকাশিত হয়েছে বইটি। এবং এটিকে তারা স্থান দিয়েছেন "রহস্য-রোমাঞ্চ" সিরিজে৷ এই সিরিজের সাথে এই বইটি একদমই মানানসই না৷ অবশ্য এ-ব্যাপারে শুরুতেই প্রকাশক মহোদয় বিস্তারিত বলে দিয়েছেন৷ তবে আমার মনে হয়, এই সিরিজে এই বইটি না রাখাই বেটার৷ কেননা এর ফলে বেনজিনের এই সিরিজের প্রতি পাঠকদের বিরূপ ধারণা আসতেই পারে৷ বইটি সেরা কোনো গোয়েন্দার বই না। বরং রম্যের বই ...