Skip to main content

বোতল ভূত - হুমায়ূন আহমেদ । কিশোর উপন্যাস । Botol Bhut by Humayun Ahmed . Novel

 হুমায়ূন আহমেদ লিখিত কিশোর উপন্যাস "বোতল ভূত।" কাকলী প্রকাশন কর্তৃক প্রকাশিত কিশোর সমগ্রের প্রথম উপন্যাস এই বোতল ভূত। ( সপ্তম মুদ্রণ, জানুয়ারি ২০০৬)

আমার মাথায়ও একটি ভূত চাপলো। ভয়ানক ভূত। ভূতের ইচ্ছা এই বয়সে এসে কিশোর পড়তে হবে৷ বেশ দ্বিধাতেই ছিলাম যে, এখন কিশোর উপন্যাস পড়ে পরিপূর্ণ মজা পাওয়া যাবে কিনা৷ লেখক হুমায়ূন আহমেদ বলেই সাহস করলাম৷ ভদ্রলোকের লেখা সহজ সাবলীল হওয়ায় যেকোনো ধাঁচের লেখাই পড়ে তৃপ্ত হওয়া যায়।
বোতল ভূত সেরা একটি কিশোর উপন্যাস৷ বোতলের মাঝে ভূত থাকে। বাচ্চা ভূত৷ বড়োরা কেউ বিশ্বাস করলেন না এর মাঝে ভূত আছে৷ কিন্তু বাচ্চা ভূত এমন সব কাণ্ড ঘটালো যাতে বিজ্ঞানের ছাত্রী অরু আপারও মাথা খারাপ হয়ে গেলো৷ তবুও তিনি মানলেন না বোতলে ভূত আছে৷ কারণ সায়েন্সে পড়লে সব অবিশ্বাস করতে হয়৷
মুনির, হুমায়ূন, বড় চাচা, নকল রবিঠাকুর, অঙ্ক স্যার, বগা ভাই এরাই মূলত মূল চরিত্র৷ আরেকটা শয়তান ছেলে আছে৷ শিক্ষক কাউকে মারলে সে খুব খুশি হয়৷ তার নাম ভুলে গেছি।
একটা পার্ফেক্ট কিশোর উপন্যাসে যেসব উপকরণ থাকা জরুরি তার সবই এখানে আছে৷ বাচ্চাদের বক্তব্যগুলো খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন গল্পকথক। যেমন - দুনিয়ার সকল নিয়ম তৈরি হয় বাচ্চাদের কষ্ট দেয়ার জন্যে৷ ডিসেম্বর মাসটাই বাদ দিয়ে দিলে ভালো হতো কারণ এ মাসেই বার্ষিক পরিক্ষা হয়। মুরুব্বিরা বাচ্চাদের দু:খ বোঝে না৷ ইত্যাদি।
আমার কাছে মনে হলো যে কেউই এই বইটা পড়ে মজা পেতে পারে। তবে কিশোররা মজা উপভোগ বিশ্বাস সবকিছুই করবে৷ ইমোশনালি কানেক্ট করতে পারবে৷ আনন্দ পাবে৷ কোনো বাস্তবিক জ্ঞানের প্যারা নেই এখানে। যদিও সুপ্তাবস্থায় অনেক কিছুই জানানো হয়েছে৷ ওসব না ভাবলেও চলবে৷
সবচেয়ে খারাপ লাগলো সায়েন্স পড়ুয়া অরু আপা শেষে নিজের চুল ছেঁটে ফেললেন৷ কি যে বিশ্রী দেখাচ্ছিলো তাকে৷ এমনিতে তিনি অসম্ভব সুন্দরী৷ বাজিতে হেরে চুল হারাতে হলো৷ তাই বাজিটাজি লাগা যাবে না৷





Comments

Popular posts from this blog

নাজিম উদ দৌলার প্রহেলিকা । Prohelika by Nazim ud doula

  লেখক নাজিম উদ দৌলার সাথে জার্নি শুরু করেছি তার লিখিত "প্রহেলিকা" উপন্যাসিকাটির মাধ্যমে৷ পড়া শেষ৷ একটি থ্রিলার মৌলিক উপন্যাসিকা৷ শহরে বাচ্চাদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে। প্রত্যেকের মাথা ইট অথবা পাথর দিয়ে থেতলে দেয়া৷ অবাক করার বিষয় প্রতিটা লাশের পাশেই পাওয়া যাচ্ছে খুনির ব্যবহৃত জিনিসপত্র৷ খুনি কী তবে এতই বোকা? নাকি এর পেছনে আছে অন্য কোনো ঘটনা? থ্রিলার গল্পের মাঝেও লেখক প্রেমের ঘটনা কানেক্ট করেছেন৷ চরিত্রগুলোকে করেছেন সাবলীল। এছাড়া মূল আসামীর আসামী হয়ে ওঠার গল্পও তুলে ধরেছেন লজিকালি। বাঙালি গোয়েন্দা যেভাবে কথা বলে, ঠিক সেভাবেই কথা বলিয়েছেন তিনি। ফ্ল্যাশব্যাকের সাথে গল্পের কানেকশন ভালোই। তবে একটা বিষয় একটু অবাস্তব লেগেছিলো। কাহিনীর টুইস্টগুলো ভালো৷ মজাদার। সাসপেন্সওয়ালা টুইস্ট না হলেও, টুইস্টগুলো মজাদার৷ একেক চরিত্র, একেক বিশেষত্ব, একেক কাহিনী। পুরোটাকে একটা ডটে এনে মিশিয়েছেন নাজিম উদ দৌলা। আর সে ডটটি হলো "ভালোবাসা।" মূল আসামীকে ধরার অনেক আগেই বুঝে যাওয়া যায় আসামীকে। কয়েক লাইনের কথোপকথনে একটু ভালোমতো খেয়াল করলেই বোঝা যায়৷ এছাড়া সেখানে খুনীর একটা দূর্বলতার কথা অনেক বলে দেয়া...

পুফি । হুমায়ূন আহমেদ

বইটা কেনার আগে নাম তেমন শুনিনি। সত্য বলতে খুঁজিও-নি। হুমায়ূন আহমেদের কিছু যেমন আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তেমনি কিছু বই আবার আন্ডাররেটেড৷ অবশ্য হুমায়ূন আহমেদ যতগুলো বই লিখেছেন সবগুলো পড়ে মতামত জানানো হয়তো সকলের জন্য সম্ভব না৷ তাই কিছু বই থেকে যায় আড়ালে। "পুফি" বইটি ঠিক তেমন একটি বই। প্রচ্ছদ আর নাম দেখে ভেবেছিলাম শিশুতোষ কোনো উপন্যাস৷ বইয়ের ভেতরে নিজের নাম লিখে রেখেছে মুনতাকা। বাচ্চাসুলভ হাতের লেখা। তাই আমি শতভাগ নিশ্চিত হয়ে গেলাম বইটা শিশুতোষই। এরপর বই পড়া শুরু। শুরুতেই হুমায়ূন আহমেদের সতর্ক বার্তায় চোখ গেলো। সেখানে যা লেখা তার সারাংশ হলো, "বইটি বাচ্চাদের থেকে একশ' হাত দূরে রাখুন। এটা বাচ্চাদের বই না৷ বইয়ের কভার দেখেই বাচ্চাদের বই ভেবেছেন৷ আপনি আসলে মগা৷ কারন আপনি হুমায়ূনের দেয়া নামকে আক্ষরিক অর্থেই বিশ্বাস করেন।" গল্পটা একটা বিড়ালকে নিয়ে। তার নাম "পুফি"৷ এই পুফিকে উপহার হিসেবে পায় অনিকা৷ তার খুব পছন্দ এই বিড়াল। বিড়ালটাও বেশ সভ্য। অনিকার বাবার নাম জোয়ার্দার। জোয়ার্দারের বিড়াল অপছন্দ৷ শুধু বিড়াল না, যেকোনো পশু-পাখি তার অপছন্দ৷ কারন তিনি যখন ছোট তখন এক...

কবি ও বাস্তবতা

 মানুষ ব্লগে কী লেখে আমি তা জানিনা । জানার কথাও না । ব্লগ খোলার কারন একটা সিভিতে ওয়েবসাইটের লিংক দিতে হবে এজন্য ।  ব্লগকে অনেকটা ডায়েরির মতো লাগে । ওপেন ডায়েরি । যে ডায়েরি বাইরে পরে থাকলেও কেউ খুলে দেখে না । অথচ হুট করে এক কৌতুহলী কেউ ডায়েরিটা হাতে নেয় । নিয়ে পড়ে । কী কী লেখা তা দেখে বোঝার চেষ্টা করে । কখনো দুঃখে ডুবে যায় , আবার কখনো অট্টহাসিতে মেতে ওঠে । এরপর লেখকের সম্পর্কে একটা ধারণা জন্ম নেয় তার মাঝে । কিছুসময় পাঠক রচয়িতাকে ভাবতে থাকে । এরপর ধীরে ধীরে ভুলে যেতে থাকে । একসময় তিনি ভুলে যান ডায়েরির কথা । ডায়েরিটা আবারও পূর্বের মতো পড়ে থাকে । তাকে কেউ আর খুলে না । ধুলোবালি জমে। প্রতিটা মানুষের জীবনে নানা রকম গল্প থাকে । আমারও আছে । সে গল্প আমি চাইলে লিখে রাখতে পারি এখানে । অথবা কিছু দুঃখের কথা লিখতে পারি । লিখতে পারি কতটুকু স্মৃতির বোঝা নিয়ে এখনো জীবিত আমি । কষ্টের কথাগুলোকে লিখে রাখতে পারি এখানে । কিন্তু তাতে লাভ কী? একজন মানুষ আমার দুঃখের কথাগুলো পড়বে এটা কেমন না? দুঃখের কথা শোনার অধিকার শুধুমাত্র প্রিয়তমার । এ বাদে আর কেউ এই কথা পড়ার মানে নিজের কোনো মূল্য না রাখা । আমার কবি...