Skip to main content

দ্য গার্ল হু লেপ্ট থ্রু টাইম - ইয়াশুতাকা শুতশুই । The Girl Who Leapt Through Time by Yasutaka Tsutsui [ Toki Wo Kakeru Shoujo ]

ইয়াশুতাকা শুতশুই এর জনপ্রিয় একটি উপন্যাস "The Girl Who Leapt Through Time". এই নামে একটি Anime-ও আছে৷ এই বইটির বাংলা অনুবাদ বের করেছে প্রিমিয়াম পাবলিকেশন৷ অনুবাদক এ.এস.এম রাহাত। অনুবাদক শুরুতেই একটা বড়ো ভুল করে ফেলেছেন। আগে সেটুকু আলাপ করি, এরপর বইয়ের আলাপে ফিরছি।
পৃষ্ঠা নং ০৫, অনুবাদকের কথায় অনুবাদ বলেছেন বইটির ক্যাটাগরি থ্রিলার৷ থ্রিলার তার পছন্দের জনরা৷ তবে মজার ব্যাপার হলো বইটার জনরা থ্রিলার না৷ বরং সাইফাই৷ সাইফাই থ্রিলার বললেও কিছুটা মানা যেতো৷ শুধু থ্রিলার দ্বারা যা বোঝায়, আদতে এই বই তেমন নয়৷ এই বইকে রোম্যান্টিক বললেও মানা যায়৷ তবে থ্রিলার কোনো ক্রমেই মানা যায় না৷
গল্পটা কাজুকোর৷ একটা মেয়ে৷ একদিন স্কুলের লাইব্রেরিতে একটা ছায়া দেখতে পায়৷ কালো ছায়াটির পিছু নিয়ে সামনে এগোয়। হঠাৎ ল্যাভেন্ডারের ঘ্রাণ পায়। এরপর থেকেই অদ্ভুত সব কাণ্ড ঘটে। আচমকা অনুধাবন করতে পারে সে একদিন পেছনে ফিরে গিয়েছে। যা কিছু ঘটবে তা সে আগে থেকেই জানে৷ অর্থাৎ সে বর্তমান থেকে একদিন পেছনে টাইম ট্রাভেলের মতো করেছে৷ সে ভাবলো এটা মনে হয় তার মাঝে থাকা কোনো বিশেষ শক্তি। তবে আদতে কি তাই? উহু! তাহলে? কালো ছায়াটি কী? সে যাদেরকে বন্ধু ভাবছে তারা কি আসলেই বন্ধু? ল্যাভেন্ডারের ঘ্রাণই বা এলো কী করে? জানতে হলে পড়তে হবে৷
অনুবাদের বিরক্তিকর দিক ছিলো হেডলাইন অনুবাদ। পরিমার্জন করে হেডলাইন না দিলে আরও সুখকর হতো৷ অথবা ইংরেজি হেডলাইনও দেয়া যেতো এক্ষেত্রে৷ অন্তত হেডলাইনগুলো এখনকার মতো বিদঘুটে লাগতো না।
অনুবাদ সাবলীল হয়েছে। সম্পাদনা করালে আরও সুন্দর হতো বলে আশাবাদী৷ সম্ভবত লাইন এডিটিং হয়নি বইটিতে৷ তবে এতে গল্পে ডুবে যেতে কোনো ঝামেলাই হয় না৷ তাই বলে বইটিতে ঝামেলা নেই, তা বলা যাবে না৷ বেশ বড়ো ঝামেলার মতো ঝামেলা ধরতে পেরেছি বলে মনে হয়েছে।
৬২ পৃষ্ঠায় এসে কাজুকোর গল্প শেষ। গল্প শেষ করে হৃদয় যখন ভারাক্রান্ত তখন দেখি গল্প আরও বাকি। কেননা বইটির মোট পৃষ্ঠা ৯৬! এই অতিরিক্ত ৩৪ পৃষ্ঠায় সম্পূর্ণ ভিন্ন এক গল্প। যার সাথে আমি প্রথম ৬২ পৃষ্ঠার কোনো মিলই খুঁজে পাইনি৷ জানিনা মূল বইয়ে ছিলো কিনা এই গল্প। থাকতেও পারে৷ তবে গল্পটা মন্দ না৷ কিন্তু মূল বইয়ে না থাকলে এই সংযোজন নিন্দনীয়।
বইটা উপভোগ্য। সায়েন্স ফিকশনের গল্পে আবেগ মিশিয়ে লিখেছেন ইয়াশুতাকা শুতশুই। কখনো অবাক হবেন আবার কখনো আবেগের টান অনুভব করবেন৷ বইটা যদিও ১২-১৫ বছর বয়সীদের জন্য তবে বড়োদের পড়তেও কোনো ঝামেলা হবে বলে মনে হয় না৷ সায়েন্স ফিকশানের পুরো ফিল বড়োরা না পেলেও অনুভূতিতে একটা দোল খাবে এতটুকু নিশ্চিত৷
আজ এই অবধিই। টাটা৷


Comments

Popular posts from this blog

নাজিম উদ দৌলার প্রহেলিকা । Prohelika by Nazim ud doula

  লেখক নাজিম উদ দৌলার সাথে জার্নি শুরু করেছি তার লিখিত "প্রহেলিকা" উপন্যাসিকাটির মাধ্যমে৷ পড়া শেষ৷ একটি থ্রিলার মৌলিক উপন্যাসিকা৷ শহরে বাচ্চাদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে। প্রত্যেকের মাথা ইট অথবা পাথর দিয়ে থেতলে দেয়া৷ অবাক করার বিষয় প্রতিটা লাশের পাশেই পাওয়া যাচ্ছে খুনির ব্যবহৃত জিনিসপত্র৷ খুনি কী তবে এতই বোকা? নাকি এর পেছনে আছে অন্য কোনো ঘটনা? থ্রিলার গল্পের মাঝেও লেখক প্রেমের ঘটনা কানেক্ট করেছেন৷ চরিত্রগুলোকে করেছেন সাবলীল। এছাড়া মূল আসামীর আসামী হয়ে ওঠার গল্পও তুলে ধরেছেন লজিকালি। বাঙালি গোয়েন্দা যেভাবে কথা বলে, ঠিক সেভাবেই কথা বলিয়েছেন তিনি। ফ্ল্যাশব্যাকের সাথে গল্পের কানেকশন ভালোই। তবে একটা বিষয় একটু অবাস্তব লেগেছিলো। কাহিনীর টুইস্টগুলো ভালো৷ মজাদার। সাসপেন্সওয়ালা টুইস্ট না হলেও, টুইস্টগুলো মজাদার৷ একেক চরিত্র, একেক বিশেষত্ব, একেক কাহিনী। পুরোটাকে একটা ডটে এনে মিশিয়েছেন নাজিম উদ দৌলা। আর সে ডটটি হলো "ভালোবাসা।" মূল আসামীকে ধরার অনেক আগেই বুঝে যাওয়া যায় আসামীকে। কয়েক লাইনের কথোপকথনে একটু ভালোমতো খেয়াল করলেই বোঝা যায়৷ এছাড়া সেখানে খুনীর একটা দূর্বলতার কথা অনেক বলে দেয়া...

পুফি । হুমায়ূন আহমেদ

বইটা কেনার আগে নাম তেমন শুনিনি। সত্য বলতে খুঁজিও-নি। হুমায়ূন আহমেদের কিছু যেমন আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তেমনি কিছু বই আবার আন্ডাররেটেড৷ অবশ্য হুমায়ূন আহমেদ যতগুলো বই লিখেছেন সবগুলো পড়ে মতামত জানানো হয়তো সকলের জন্য সম্ভব না৷ তাই কিছু বই থেকে যায় আড়ালে। "পুফি" বইটি ঠিক তেমন একটি বই। প্রচ্ছদ আর নাম দেখে ভেবেছিলাম শিশুতোষ কোনো উপন্যাস৷ বইয়ের ভেতরে নিজের নাম লিখে রেখেছে মুনতাকা। বাচ্চাসুলভ হাতের লেখা। তাই আমি শতভাগ নিশ্চিত হয়ে গেলাম বইটা শিশুতোষই। এরপর বই পড়া শুরু। শুরুতেই হুমায়ূন আহমেদের সতর্ক বার্তায় চোখ গেলো। সেখানে যা লেখা তার সারাংশ হলো, "বইটি বাচ্চাদের থেকে একশ' হাত দূরে রাখুন। এটা বাচ্চাদের বই না৷ বইয়ের কভার দেখেই বাচ্চাদের বই ভেবেছেন৷ আপনি আসলে মগা৷ কারন আপনি হুমায়ূনের দেয়া নামকে আক্ষরিক অর্থেই বিশ্বাস করেন।" গল্পটা একটা বিড়ালকে নিয়ে। তার নাম "পুফি"৷ এই পুফিকে উপহার হিসেবে পায় অনিকা৷ তার খুব পছন্দ এই বিড়াল। বিড়ালটাও বেশ সভ্য। অনিকার বাবার নাম জোয়ার্দার। জোয়ার্দারের বিড়াল অপছন্দ৷ শুধু বিড়াল না, যেকোনো পশু-পাখি তার অপছন্দ৷ কারন তিনি যখন ছোট তখন এক...

কবি ও বাস্তবতা

 মানুষ ব্লগে কী লেখে আমি তা জানিনা । জানার কথাও না । ব্লগ খোলার কারন একটা সিভিতে ওয়েবসাইটের লিংক দিতে হবে এজন্য ।  ব্লগকে অনেকটা ডায়েরির মতো লাগে । ওপেন ডায়েরি । যে ডায়েরি বাইরে পরে থাকলেও কেউ খুলে দেখে না । অথচ হুট করে এক কৌতুহলী কেউ ডায়েরিটা হাতে নেয় । নিয়ে পড়ে । কী কী লেখা তা দেখে বোঝার চেষ্টা করে । কখনো দুঃখে ডুবে যায় , আবার কখনো অট্টহাসিতে মেতে ওঠে । এরপর লেখকের সম্পর্কে একটা ধারণা জন্ম নেয় তার মাঝে । কিছুসময় পাঠক রচয়িতাকে ভাবতে থাকে । এরপর ধীরে ধীরে ভুলে যেতে থাকে । একসময় তিনি ভুলে যান ডায়েরির কথা । ডায়েরিটা আবারও পূর্বের মতো পড়ে থাকে । তাকে কেউ আর খুলে না । ধুলোবালি জমে। প্রতিটা মানুষের জীবনে নানা রকম গল্প থাকে । আমারও আছে । সে গল্প আমি চাইলে লিখে রাখতে পারি এখানে । অথবা কিছু দুঃখের কথা লিখতে পারি । লিখতে পারি কতটুকু স্মৃতির বোঝা নিয়ে এখনো জীবিত আমি । কষ্টের কথাগুলোকে লিখে রাখতে পারি এখানে । কিন্তু তাতে লাভ কী? একজন মানুষ আমার দুঃখের কথাগুলো পড়বে এটা কেমন না? দুঃখের কথা শোনার অধিকার শুধুমাত্র প্রিয়তমার । এ বাদে আর কেউ এই কথা পড়ার মানে নিজের কোনো মূল্য না রাখা । আমার কবি...