২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৩।
একটি মেয়ে বইমেলা প্রাঙ্গণে এলো। মেয়েটির নাম সম্ভবত সিনথিয়া৷ মেয়েটি দেখতে কেমন আমি জানিনা। সেদিন তার পরনে কী ছিলো তা-ও জানিনা৷ অনুমান করি তার পরনে ছিলো নীল রঙা শাড়ি। ঠান্ডা কিসিমের দূরন্ত মেয়েটি পুরো মেলা টো টো করে ঘুরছে৷ শতশত বই দেখছে৷ অথচ তার মনে জায়গা করে আছে একজন লেখকের নাম। হুমায়ূন আহমেদ৷
খুঁজতে খুঁজতে দৃষ্টি আটকালো ধ্রুব এষের আঁকা নীল রঙা প্রচ্ছদে৷ বইয়ের কথা সাজিয়েছেন তার প্রিয় হুমায়ূন আহমেদ। সিনথিয়া বইটি নেড়েচেড়ে দেখলো৷ এপাশ-ওপাশ৷ সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে দামটিও দেখে নিলো৷ হ্যাঁ, কেনা যায়৷ তবে হুমায়ূন আহমেদের অটোগ্রাফ পেলে খুশি হতো সে৷ না পাওয়াতেও আক্ষেপ নেই৷ প্রিয় লেখকের আঁকা গল্পে চোখ জুড়াবে, হৃদয় প্রশান্ত হবে৷ এটাই-বা কম কী!
বইটি কিনে খুশি মনে সিনথিয়া ঘরে ফিরলো। কাঠ পেন্সিলের কালিতে নিজের নাম লিখে রাখলো বইয়ের কোণায়৷ Sinthiya 28-2-003
এরপরে কী হয় জানিনা৷
সেদিন ছিলো শুক্রবার। ইসলামী বইমেলা ২০২৪। বায়তুল মোকাররম থেকে বের হলাম। উদ্দেশ্য হুমায়ূন আহমেদের কিছু পুরোনো বই সংগ্রহ করবো৷ পুরোনো বই সংগ্রহের ফজিলত হলো এতে আবেগ মিশে থাকে, ভালোবাসা মিশে থাকে৷ মিশে থাকা না জানা অনেক স্মৃতি। পুরনো বইয়ের পাতায় লেখা থাকে নানান কিছু।
ফুটপাতের দোকানে থাকা নীল শাড়ির প্রচ্ছদে নজর গেলো। বইটা হাতে নিলাম। পৃষ্ঠা উল্টালাম৷ সেখানে লেখা সিনথিয়া৷ ভাবলাম, বইটা হয়তো তার খুব পছন্দের ছিলো৷ অথবা খুব অপছন্দের৷ তবে অপছন্দের বইয়ে এভাবে কেউ নিজ নাম গেঁথে রাখবে না।
ইচ্ছে হলো সিনথিয়ার গল্পের অংশ হওয়ার। তাই বইটা নিয়ে নেয়া৷ আমি জানিনা সিনথিয়া কে। দেখতে কেমন। জানিনা তার অস্তিত্ব আছে কিনা। শুধু এটুকুই জানি, তার একটুকরো ভালোবাসা এখন আমার কাছে৷
Comments
Post a Comment