Skip to main content

যে বই ফুটপাতে

 ❝ Happy Birthday!!


Moon k Priony
U know babe I love U.....
Ummmahh!❤️....
08/11/2014 ❞

আট নভেম্বর, দু'হাজার চৌদ্দ। শনিবার৷ খুব যত্ন করে নিজের বুকশেল্ফ থেকে প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের একটি বই বের করলো প্রিয়ন্তী৷ বইটির দিকে অপলক তাকিয়ে থেকে একবার হাত বুলিয়ে নিলো সে৷ বইটা খুব শখ করে কিনেছিলো সে৷ এতকাল ধরে বইটা যত্নে ছিলো তার কাছে৷ তবে আজ তার গন্তব্য অন্য কোথাও৷

প্রিয় মানুষকে উপহার হিসেবে দিতে হয় নিজের প্রিয় কিছু৷ প্রিয়ন্তীর প্রিয় বলতে যা বোঝে, তা মূলত বই৷ বইয়ের থেকে ভালো সঙ্গী আর কেউ হয়? তবুও মানুষদের মধ্য থেকে কেউকেউ প্রিয় হয়ে যায়৷ তেমনই একজন মুন। মুনই একমাত্র যার কাছে সুখ-দু:খের আলাপ মন খুলে করতে পারে প্রিয়ন্তী৷ প্রিয়ন্তীর প্রায় অংশ হয়ে গিয়েছে মেয়েটা৷ এই দুষ্টু, দুরন্ত মেয়েটার জন্মদিন ছিলো সেদিন৷ তাই নিজের পছন্দের বই উপহার দেবে বলে ভাবে প্রিয়ন্তী। যেই ভাবা সেই কাজ।

বইটা নিয়ে টেবিলে বসে আছে প্রিয়ন্তী৷ কী লিখবে? কিছুই মাথায় আসছে না৷ অবশ্য মনে মনে ভাবছে অনেককিছুই৷ বলতেও মন চাচ্ছে অনেক কিছু৷ কিন্তু মনের অনুভূতি কখনো কখনো ভাষায় প্রকাশ করা যায় না৷ প্রিয়ন্তীও পারলো না৷ তবে একেবারে কোনো কিছু না লিখে দিলে ভুলে যাবে মুন৷ তাই অতশত না ভেবে সোজাসুজি লিখে দিলো - "শুভ জন্মদিন! মুনকে প্রিয়ন্তী৷ তুমি জানো বাবু আমি তোমাকে ভালোবাসি৷ উম্মাহ"

এরপর কেটে গেলো দশ বছর৷ সেদিন কিছু পুরোনো বইয়ের খোঁজে গিয়েছিলাম পল্টন৷ পুরোনো বইয়ে পাওয়া যায় অনেকের স্মৃতি৷ সেই স্মৃতিগুলোর সাথে মিশে যাওয়া যায়৷ হওয়া যায় তাদের স্মৃতির অংশ৷ অন্যের স্মৃতিতে ডুবে যাওয়াতে অন্যরকম এক আনন্দ আছে৷ সেই আনন্দ আহরণই আমার একমাত্র উদ্দেশ্য।

দোকানগুলোতে চোখ বোলাচ্ছিলাম তখনই আটকে গেলাম হুমায়ূন আহমেদের "আনন্দ বেদনার কাব্য"- তে৷
প্রথম পাতা ওল্টাতেই নজর গেলো প্রিয়ন্তীর লেখা উইশে৷ কত আবেগ নিয়ে লিখতে চেয়েছিলো৷ অথচ শেষ অবধি শুধু ভালোবাসার জানান দিয়ে শেষ করতে হলো।

আমি জানিনা মুনের কেমন লেগেছিলো বইটি উপহার পেয়ে৷ কতটুকু যত্ন করেছে তা-ও জানিনা৷ শুধু অনুভব করি প্রিয়ন্তীর আবেগ আর উত্তেজনার সাথে বই উপহার দেয়ার যাত্রা৷ কি অদ্ভুত! সেই বই দশ বছর ঘুরে আমার হাতে৷ নতুন করে নতুন স্মৃতির অংশ হয়েছি৷ মন্দ লাগছে না৷ বরং আনন্দের৷

প্রিয়ন্তী,

আপনার বই যত্নে আছে৷
নোট - বইয়ের সাথে একটি র‍্যাপিং পেপার পেয়েছিলাম।
২৫ মার্চ, মঙ্গলবার, ২০২৫







Comments

Popular posts from this blog

নাজিম উদ দৌলার প্রহেলিকা । Prohelika by Nazim ud doula

  লেখক নাজিম উদ দৌলার সাথে জার্নি শুরু করেছি তার লিখিত "প্রহেলিকা" উপন্যাসিকাটির মাধ্যমে৷ পড়া শেষ৷ একটি থ্রিলার মৌলিক উপন্যাসিকা৷ শহরে বাচ্চাদের লাশ পাওয়া যাচ্ছে। প্রত্যেকের মাথা ইট অথবা পাথর দিয়ে থেতলে দেয়া৷ অবাক করার বিষয় প্রতিটা লাশের পাশেই পাওয়া যাচ্ছে খুনির ব্যবহৃত জিনিসপত্র৷ খুনি কী তবে এতই বোকা? নাকি এর পেছনে আছে অন্য কোনো ঘটনা? থ্রিলার গল্পের মাঝেও লেখক প্রেমের ঘটনা কানেক্ট করেছেন৷ চরিত্রগুলোকে করেছেন সাবলীল। এছাড়া মূল আসামীর আসামী হয়ে ওঠার গল্পও তুলে ধরেছেন লজিকালি। বাঙালি গোয়েন্দা যেভাবে কথা বলে, ঠিক সেভাবেই কথা বলিয়েছেন তিনি। ফ্ল্যাশব্যাকের সাথে গল্পের কানেকশন ভালোই। তবে একটা বিষয় একটু অবাস্তব লেগেছিলো। কাহিনীর টুইস্টগুলো ভালো৷ মজাদার। সাসপেন্সওয়ালা টুইস্ট না হলেও, টুইস্টগুলো মজাদার৷ একেক চরিত্র, একেক বিশেষত্ব, একেক কাহিনী। পুরোটাকে একটা ডটে এনে মিশিয়েছেন নাজিম উদ দৌলা। আর সে ডটটি হলো "ভালোবাসা।" মূল আসামীকে ধরার অনেক আগেই বুঝে যাওয়া যায় আসামীকে। কয়েক লাইনের কথোপকথনে একটু ভালোমতো খেয়াল করলেই বোঝা যায়৷ এছাড়া সেখানে খুনীর একটা দূর্বলতার কথা অনেক বলে দেয়া...

মমতাদি - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় । Momotadi by Manik Bandopadhyay

  "কেউ যা দেয় না, তুমি তা দেবে কেন?" বাক্যটির কথা সকলেরই মনে থাকার কথা৷ লাইনটুকু পড়েই খিলখিল করে হেসে উঠতো সবাই। সে হাসি দুষ্টু হাসি। ক্লাসের অন্য কোনো স্মৃতি কারও মনে না থাকলেও মমতাদিকে মনে হয়না কেউ ভুলেছে৷ মমতাদিকে ঘিরেইতো ছিলো বাংলা ক্লাসে হাসাহাসির আয়োজন। অন্তত সেই বাঙলা ক্লাসের স্মৃতিকে আগলে রাখায় মমতাদির একটি ধন্যবাদ প্রাপ্য। এখানে শিক্ষার্থীদের দোষ দিয়েও লাভ নেই। গল্পটার আংশিক ছিলো সে বইয়ে৷ মূলটুকুই দেয়া হয়েছিলো বাদ৷ ফলে মমতাদি ঠিক কেমন তা বুঝে ওঠা হয়নি কারোরই৷ তবে ক্লাসে জানা হয়নি বলে আর জানা হবে না, তা কিন্তু নয়। বেনজিন প্রকাশন কর্তৃক প্রকাশিত "মমতাদি" বইটি পড়লেই জানা যায় কে এই মমতাদি৷ বইটিতে স্থান পেয়েছে দুইটি গল্প৷ একটি "মমতাদি" এবং অপরটি "বৃহত্তর মহত্তর।" মমতাদির দু:খের জীবন যাপনের বিষয়টি ফুটিয়ে তোলা হয়েছে প্রথম গল্পে৷ যেনো গ্রাম বাংলার সংসারের নিত্যদিনের রূপ মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় চিত্রায়িত করেছেন রঙ-তুলিতে। এত দূর্দশা অত্যাচারের পরেও স্বামীর প্রতি ভালোবাসার কথা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই গল্পে৷ "বৃহত্তর মহত্তর" গল্পে আবার একই মমতা...

পুফি । হুমায়ূন আহমেদ

বইটা কেনার আগে নাম তেমন শুনিনি। সত্য বলতে খুঁজিও-নি। হুমায়ূন আহমেদের কিছু যেমন আকাশ ছোঁয়া জনপ্রিয়তা পেয়েছে, তেমনি কিছু বই আবার আন্ডাররেটেড৷ অবশ্য হুমায়ূন আহমেদ যতগুলো বই লিখেছেন সবগুলো পড়ে মতামত জানানো হয়তো সকলের জন্য সম্ভব না৷ তাই কিছু বই থেকে যায় আড়ালে। "পুফি" বইটি ঠিক তেমন একটি বই। প্রচ্ছদ আর নাম দেখে ভেবেছিলাম শিশুতোষ কোনো উপন্যাস৷ বইয়ের ভেতরে নিজের নাম লিখে রেখেছে মুনতাকা। বাচ্চাসুলভ হাতের লেখা। তাই আমি শতভাগ নিশ্চিত হয়ে গেলাম বইটা শিশুতোষই। এরপর বই পড়া শুরু। শুরুতেই হুমায়ূন আহমেদের সতর্ক বার্তায় চোখ গেলো। সেখানে যা লেখা তার সারাংশ হলো, "বইটি বাচ্চাদের থেকে একশ' হাত দূরে রাখুন। এটা বাচ্চাদের বই না৷ বইয়ের কভার দেখেই বাচ্চাদের বই ভেবেছেন৷ আপনি আসলে মগা৷ কারন আপনি হুমায়ূনের দেয়া নামকে আক্ষরিক অর্থেই বিশ্বাস করেন।" গল্পটা একটা বিড়ালকে নিয়ে। তার নাম "পুফি"৷ এই পুফিকে উপহার হিসেবে পায় অনিকা৷ তার খুব পছন্দ এই বিড়াল। বিড়ালটাও বেশ সভ্য। অনিকার বাবার নাম জোয়ার্দার। জোয়ার্দারের বিড়াল অপছন্দ৷ শুধু বিড়াল না, যেকোনো পশু-পাখি তার অপছন্দ৷ কারন তিনি যখন ছোট তখন এক...